নুরুল ইসলাম হেলালী :
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং এ অবস্থান করছেন। তিনি আপাতত শারিরীকভাবে ভাল আছেন। যদিও চিকিৎসার জন্য দিল্লীতে আসা যাওয়া করেছেন বেশ কয়েকবার। ভারতীয় একটি পাসপোর্ট এক্ট মামলায় প্রায় দুই বছর সাত মাস তিনি ভারতের শিলং এ অবস্থান করছেন এবং তিনি সেখানে জামিনে মুক্ত আছেন।
সালাহউদ্দিন আহমদের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সালাহ উদ্দিন আহমদ দেশে আসার জন্য উদগ্রীব, তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে মামলার রায় হলে তিনি খালাস পাবেন। তিনি বাংলাদেশে আটক পরবর্তী গুম করে রাখার পর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কাটিং, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রমানাদি ভারতের বিচারাধীন আদালতে উপস্থাপন করেছেন। উক্ত প্রমানাদি দেখে বিজ্ঞ জজ উক্ত মামলা থেকে খালাস দিবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
তিনি নামাজ দোয়া, কোরআন হাদিস, পত্র পত্রিকা ও বই পড়ে মেঘালয়ের শিলং এ সময় কাটাচ্ছেন।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ কে আটক করে। দীর্ঘ ৬২ দিন একটি অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার পর ১১ মে ভারতের মেঘায়ের শিলং শহরে একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে রেখে গাড়িটি চলে যায়। ওই দিন কাক ডাকা ভোরে শিলং শহরের গলফ লিংক মাঠের পাশে সড়কে উপর বহন করা একটি সাদা মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দেয়। এ সময় তিনি ওই এলাকার স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে সংবাদ পৌঁছালে পরে পুলিশ এসে ওনাকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চিকিৎসার জন্য শিলং এ অবস্থিত প্রথমে মিমহানস হাসপাতালে দ্বিতীয় সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করে পরে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানীয় নেগ্রিমস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক মাস তিনি নেগ্রিমস হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসা নিয়েছিলেন। পরে শিলং পুলিশ স্থানীয় আদালতে সালাহ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে একটি মামলা রুজু করে, উক্ত মামলায় তিনি নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসছে এবং তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। মেঘালয়ের একজন সিনিয়র আইনজীবী এসপি মোহন্ত এ মামলা পরিচালনা করেন।
বিগত ১৫ সালের ১১ মার্চ ভারতের শিলংএ মুক্ত হওয়ার পর আজ প্রায় দু‘বছর সাত মাস সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ ভারতে অবস্থান করছেন। ভারতে অবস্থানকালে সালাহ উদ্দিন আহমদের শরীরের কিডনি, ঘাড় ও চর্ম রোগ এর সমস্যা দেখা দিলে তিনি একাধিকবার দিল্লী গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রথমবার দিল্লী গিয়ে ঘাড়ে অস্ত্রোপচার করেন দ্বিতীয়বার গিয়ে কিডনীতে অস্ত্রপাচার করে তিনি এখন সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন। দিল্লীর হরিয়ানা রাজ্যের মেদান্ত হাসপাতালে তিনি উক্ত চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই রোগের চিকিৎসা নেওয়ার পর, তিনি এখন সুস্থ থাকলেও ঠান্ডাজনিত কারণে মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন কারণ শিলংএ প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা। সালাহ উদ্দিন আহমদ শিলংএ সানরাইজ গেস্ট হাউজ নামে একটি গেস্ট হ্উাজে অবস্থান করে থাকেন। শিলং মেঘালয়ের রাজধানী, শিলং এর কেন্দ্রস্থল পুলিশ বাজার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দুরে লাবান এলাকায় সানরাইজ গেস্ট হাউজ অবস্থিত। উক্ত গেস্ট হাউজটি দেখতে খুবই সুন্দর এটি নির্মাণে যথেষ্ট নৈপুণ্যতা রয়েছে, উক্ত গেস্ট হাউজে সাতটি রুম রয়েছে, তন্মধ্যে একটি রুমে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ অবস্থান করেন। সালাহ উদ্দিন আহমদ এর স্ত্রী সাবেক এম পি হাসিনা আহমদ ছেলে মেয়েদের সাথে নিয়ে বছরে দু‘একবার দেখা করার জন্য শিলংএ যান।
এছাড়াও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীরা সালাহ উদ্দিন আহমদ এর সাথে দেখা করার জন্য ভারতের শিলং গিয়ে থাকেন।
অন্য একটি সূত্র জানায়, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে স্বল্প পরিসরে হলেও নিজ জেলা কক্সবাজার ও জাতীয় রাজনীতির খোঁজ খবর রাখেন। প্রয়োজন মনে করলে দিক নির্দেশনা দেন।